Advertisement
Durga Puja 2019

হান্সলোয় এ বার মাকে প্রণামের সময় মনে পড়ে যাবে দেশে ফেলে আসা কৈশোরের কথা

পুজো শেষে চিন্ময়ী মা আবার মৃন্ময়ী রূপ নিয়ে বাক্সবন্দী হয়ে স্টোরেজ’এ ঢুকে পড়েন।

অর্ঘ্য ধর
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৯ ১১:৩৯
Share: Save:

হারিকেন লরেঞ্জো’র পরোক্ষ প্রভাবে লন্ডনের আকাশের যখন মুখ ভার তখন পুজোর মণ্ডপ শারদীয়া উৎসবের আলোয় উদ্ভাসিত। পশ্চিম লন্ডনের হান্সলোয় প্রবাসীর পুজো এ বারে আট-এ পা দিল। আগাম শীতে অসময়ের ওভারকোট-এর নীচে লুকিয়ে থাকা শাড়ি-গয়নার চেকনাই প্রকাশ্য না হওয়া পর্যন্ত অবশ্য বোঝার উপায় নেই পুজো এসে গেছে। এই শারদীয়ায় কাশফুল নেই, শিশির ভেজা শিউলি নেই। আন্তরিকতায় ভর করে এসব না থাকাগুলো অবশ্য উৎসবের রোশনাই এতটুকু শুষে নিতে পারে না।

বিলেতে ফি বছর নতুন প্রতিমা হয় না। প্রতিমা অন্তত চার-পাঁচ বছর ধরে পূজিতা হন। পুজো শেষে চিন্ময়ী মা আবার মৃন্ময়ী রূপ নিয়ে বাক্সবন্দী হয়ে স্টোরেজ’এ ঢুকে পড়েন। প্রতিমার চাকন-চিকন ধরে রাখতে বোধনের আগে তাই বিলেতবাসী বঙ্গললনারা পরম আদরে শাড়ির আঁচল দিয়ে প্রতিমার মুখ মুছিয়ে দেবীকে বরণ করে নেন। মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠার সময় বহু বছর বিদেশে থাকা বাঙালি যখন করজোড়ে মা দুর্গাকে নত মস্তকে প্রণাম করেন তখন তার সজল নয়নের স্মৃতিপটে ধরা পড়ে হারিয়ে যাওয়া শৈশব বা কৈশোরের কথা।

প্রবাসীর শারদীয়া আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয় সরস্বতী পুজোর পর থেকে। আট বছরে একই জায়গায় পুজো তাও ফি বছরের বায়না করতে দলবেঁধে সকলের যাওয়া চাই। গরমের ছুটির শেষে দেশ থেকে ফেরার সময় সারা হয় দশকর্ম্মার বাজার। পুজোর শাড়ি-ধুতি-গামছা, তিল-হরীতকী-গঙ্গা জল সবই আসে দেশ থেকে। বিলেতে এসব পাওয়া যায় না এমন নয়। তবুও দেশের ঐটুকু ছোঁয়া কেমন যেন স্মৃতির গন্ধ নিয়ে ফিরে আসে।

আরও পড়ুন: বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণের স্বাদ দিতেই আগমনীর দুর্গাপুজো

প্রায় অর্ধ-শতাধিক সদস্য পরিবারের কচি-কাঁচা থেকে বড়রা সবাই মিলে পরিকল্পনা করে তিন দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। অবাঙালি সদস্যরা যাতে নিরুৎসাহ না হয়ে পড়েন সেজন্য অনুষ্ঠানগুলোর একটা সর্বজনীন চেহারা দেওয়ার চেষ্টাও হয়। আর চারদিন ধরে চলে দু’বেলা নিরামিষ প্রসাদ বিতরণ। গত বছর আটবেলায় যে প্রায় হাজার আষ্টেক মানুষ প্রসাদ পেয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই অবাঙালি এবং অভারতীয়। আনন্দময় কলরোলের মধ্যে এদের তৃপ্তিময় অনুভূতিটুকুই প্রবাসীর প্রাপ্তি।

ছবি: শুভজিৎ দত্ত রায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE