এশিয়ান গেমসে ব্রিজে সোনা জয়ের পর এই পুজো যেন খুবই স্পেশ্যাল শিবনাথ দে সরকারের কাছে।
প্রতি বছরই শরত এলে মনটা কেমন করে ওঠে। আগমনী সুর শুনতে পাই হৃদয়ে। এ বারও তা টের পাচ্ছি। কিন্তু, কোনও সন্দেহ নেই এ বারের পুজো আমার কাছে একেবারেই অচেনা ঠেকছে!
এশিয়ান গেমসে ব্রিজে সোনা সত্যিই পাল্টে দিয়েছে অনেক কিছু। আমাকে এখন পুজো উদ্বোধনে যেতে হবে। যা ভাবতেই পারতাম না। তাস খেলি বলে কত কথা শুনতে হয়েছে। আর এখন সেই তাস খেলে সোনা পেয়েই ডাক পাচ্ছি পুজোর উদ্বোধনে যাওয়ার। আর সেটাও একটা-দুটো নয়, খান পঞ্চাশ পুজোর উদ্বোধন করতে হবে আমাকে। হাওড়াতেও যেমন রয়েছে, তেমনই কলকাতাতেও যেতে হবে নানা জায়গায়। পুজো উদ্বোধন মানে আমার কাজটা ঠিক কী, জানি না। আমায় কী করতে হবে, তাই বুঝতে পারছি না। তবে বেশ থ্রিলিং লাগছে।
এমনিতে পুজোর ক’দিন আমার ধরাবাঁধা ঠিকানা হল পুজো প্যান্ডেল। বাড়ির একদম লাগোয়া পুজো। সকাল থেকে চার-পাঁচজন বসে থাকি চেয়ার দখল করে। চলে আড্ডা। একবারই বাড়ি ফিরি, দুপুরে। খানিক ক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফের ছ’টা-সাতটা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত থাকি প্যান্ডেলে। অনেকেই ফাঁকে ফাঁকে এসে আড্ডা দেয়, আবার পরিবারের সঙ্গে বেরোয়। আমরা ক’জন কোথাও বেরোই না। এ বারও পুজোর ক’দিন ওই একই রুটিন থাকবে।
আরও পড়ুন: এই পুজোয় খাওয়া-ঘুম-রাধুবাবুর স্টু, নব প্রেম পঞ্চাশে
আরও পড়ুন: আড্ডা আর প্রচুর খাওয়া, এটাই আমার পুজো, বলছেন ঋদ্ধিমা
তবে এ বার একটু সংযত থাকতে হবে আমাকে। অন্য বার যেমন সবার সঙ্গে মিশে গিয়ে উত্সবে মেতে উঠি, তা পুরোপুরি করা যাবে না। এমনিতে আমার বন্ধুরা অনেকেই ধুনুচি নাচে মেতে ওঠে। বিসর্জনের সময়ও নাচ-গান হয়। এ বার আমাকে মাথায় রাখতে হবে যে, অনেকেই হয়তো তাকিয়ে থাকবে আমার দিকে।
পুজোর ক’দিন কিন্তু আমরা তাস নিয়ে কোনও আলোচনা করি না। এর একটা ব্যাপার হল যে, সারা বছরই আমাদের তাস নিয়ে কাটে। পুজোর সময় তাই তাস থেকে দূরে থাকতে মন্দ লাগে না। আর একটা কারণ হল, তাসের তো নিজস্ব একটা ভাষা রয়েছে। সেটা সবাই বোঝে না, বোঝা সম্ভবও নয়। ফলে, আড্ডার তাল কাটে। সচেতন ভাবেই তাই শারদীয়া আড্ডার বাইরে রাখি তাসকে। যদিও এ বার তা কতটা সম্ভবপর, নিজেরও সংশয় রয়েছে। কারণ, এশিয়াডের সোনা নিয়ে আড্ডায় কেউ না কেউ কথা বলবেই। ফলে, এ বারের পুজোর আড্ডায় সঙ্গী হবে তাসও।
আমাদের আবার একান্নবর্তী বাড়ি। সাধারণত ভাইফোঁটার সময় দিদি-দাদারা সবাই বাড়িতে আসে। এ বার এশিয়াডের সোনার জন্যই পুজোর সময় সবাই আসছে। অতএব, পুজোর সময় তাস নিয়ে আলোচনা চলবে বাড়িতেও। আগেই বলেছি না, এ বার পুজো আমার কাছে একেবারেই নতুন-নতুন ঠেকছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy