Advertisement
CELEBRITY

রুবি বলে একটা মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম ভীষণ ভাবে, তার পর...

পুরো প্যান্ডেল ভেঙে পড়ল। আমাদের সামনে শুধু ডিম সিদ্ধ...

প্রদীপ সরকার
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:৩৯
Share: Save:

পুজো একটা ‘ব্যাপার’ বাঙালীদের কাছে। আমি তখন কলকাতায়। যোধপুর পার্কে থাকতাম। একটা লেক ছিল, তার পাশে পুজো হত। এমনিতেই রাতে বেশি দূরে যেতে দিত না বাড়ি থেকে। তবে আমার পুজোর সময় সিনেমা, যাত্রা, নাটক- এসব বেশি ভাল লাগত। যখন চান্স পেতাম, পিসিদের সঙ্গে যেতাম।

এক বার বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলাম। তখন কোন ক্লাসে পড়ি, ফাইভ-সিক্স বা সেভেন হবে। এক বার থিয়েটার দেখেছিলাম, বেশ লাগছিল, সে সময় পিছন থেকে সব হইহই করে ঢুকল। বেশ চমকে গিয়েছিলাম, এ সব কী হচ্ছে? বেশ মনে ধরেছিল। ওই যে ইন্টারেক্টিভ ব্যাপারটা সেসময় হত, ’৬৭-’৬৮ সালে— তা আমার দারুণ লাগত।

তা ছাড়া অত বেশি আমি মিশতাম না। আমি বরাবরই একটু ইন্ট্রোভার্ট। তা ছাড়া বাড়ির চাপ ছিল। তার পর ’৭১ এ চলে যাই দিল্লি। চিত্তরঞ্জন পার্কের কাছে লাজপত নগরে। সেখানে প্রবাসী বাঙালিদের পুজো মানে অন্য ব্যাপার। ওখানে গিয়ে একটু ছাড় পেলাম। মেলামেশা করা শুরু করি।

আরও পড়ুন: এ বার পুজোয় মুম্বই ছাড়ছি, কেন জানেন?

তখন বুঝলাম, পুজো একটা মজার ব্যাপার। সেই সময় হঠাৎ করে ইচ্ছে হল, ডেকরেশন করব। সে বার মা ঘোড়ায় এসেছিলেন। আর ঘোড়ায় আসা মানে তো ঝড়-টড় হয়, আমি শুনেছিলাম। বিশাল ঘোড়া আঁকলাম, প্যান্ডেল করলাম। লোকজন বলল উট হয়েছে। সে যাই হোক, হঠাৎ ঝড় আসল। পুরো প্যান্ডেল ভেঙে পড়ল। আমাদের সামনে শুধু ডিম সিদ্ধ, সবাই মিলে তাই খেলাম। যত ক্ষণ না প্যাণ্ডেল থেকে বার করা হয়। তারপর মুম্বই চলে এলাম, আবারও মেলামেশা বন্ধ হল।

তারপর কাজের সূত্রে ফের কলকাতা গেলাম, শুটিং করলাম। অ্যাকচুয়াল পুজোয় শুট করলাম। তারপর গেলাম পরিণীতার শুট করতে। পুজোয় এতদিন যা যা দেখেছি যেমন ধুনুচি নৃত্য, সেইসব রিক্রিয়েট করলাম লাহা বাড়ির দালানে আর সব দৃশ্যতেও পুজো ঢোকালাম। খুব একটা যাওয়া হয় না কলকাতায়। একটা শর্ট ফিল্ম করেছি পুজোয়। আমার স্ত্রী বলেছেন— ‘তুমি পাগল হয়ে গেছ, পুজোয় শুটিং করছ!’। আমি বললাম, ‘এ বার পুজোয় একটা দারুণ ব্যাপার হবে।’

সত্যি বলতে, আমি ধুপধাপ প্রেমে পড়ে যাই। যাঁর যাঁর সঙ্গে শুটিং করি, প্রেমে পড়ে যাই। তা না হলে ভিতরের প্রতিভা বার করে আনা যায় না। পুজোর সময়েও ধুপধাপ প্রেমে পড়তাম। হোঁচটও খেয়েছি। রুবি বলে একটা মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম ভীষণ ভাবে। লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখতাম, আড় চোখে দেখতাম মা আসছে কি না। ব্যাপারটা ভাল লাগত। তার পর তিন তলার বাড়ি থেকে দেখতাম মেয়েটা কখন যাবে। পরে অবশ্য ওই মেয়েটির সঙ্গে আর দেখাই হয়নি। তারপর ম্যাচিওরিটি এল, বাড়ি থেকে বলল, এ বার আমার বিয়ে হবে। স্ত্রী-র সঙ্গে বিয়ের আগে পুজোর মধ্যে এক বার দেখা হল। আমার মনে হয়, পুজোর সময় একটা গন্ধ বেরোয়, যা সকলের সঙ্গেই হয়।

আরও পড়ুন: আজকের পর আসছে বছর আবার হবে

এবার পুজোয় জানি না কি হবে। অষ্টমীর দিন তো কোথাও গিয়ে অঞ্জলি দিতেই হবে। এবার বাড়িতে অশৌচ চলছে। তাই আদৌ যেতে পারব কিনা বা আমায় যেতে দেওয়া হবে কি না, জানি না।

আসলে কাজ ছাড়া কোথাও যেতে পারি না। ‘গিল্টি ফিল’ হয়। কলকাতা ছাড়ার পর হয়তো ৩-৪ বার পুজোয় কলকাতা গিয়েছি। বাবা খুব পুজোর মধ্যে ভিড়তেন। আমার আবার তা হয়নি, মুম্বইয়েও নয়। কাজ ছাড়া গণ্ডগোল হয়ে যায়। এটা একটা ‘ম্যানুফ্যাকচারিং ডিফেক্ট’। কাজ ছাড়া থাকতে পারি না। অষ্টমীর দিন কাজ রাখছি না। তাই মুখার্জি বাড়ির পুজোয় যাব। ওখানে আবার আমার স্ত্রী ভিড়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE