Advertisement
Celebrity Durga Puja

মহালয়ার ইছামতী, শিউলি ফুল খুব মিস করি: মনামি ঘোষ

নতুন ডিজাইনের ব্লাউজ দেখলেই ভাবি, ‘বাহ! একটা এ রকম বানাতে হবে।’

মনামি ঘোষ

মনামি ঘোষ

মনামি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:৪৮
Share: Save:

পুজো বলতেই মনে ভাসে নতুন পোশাক, অষ্টমীর অঞ্জলি। সঙ্গে অষ্টমী বা নবমীতে ভোগ খাওয়া। আর প্রচুর লাইট। লাইটিং ছাড়া পুজোর কথা ভাবাই যায় না।

ছোটবেলায় খুব প্যান্ডেল হপিং করতাম। এখন আর হয় না। তবে কাজের সূত্রেই প্যান্ডেলে ঘুরতে হয়। যাদের দেখতে ভাললাগে সবাইকেই দেখি। ছেলেদের থেকে মেয়েদের বেশি দেখি। কে কী পোশাক পরেছে, সুন্দর শাড়ি, নতুন ডিজাইনের ব্লাউজ, সব দেখি। আর ভাবি, ‘বাহ! এই ব্লাউজের ডিজাইনটা তো খুব ভাল, একটা এ রকম বানাতে হবে।’ সেলিব্রিটি হয়ে যাওয়ার পর আগের মতো যদিও সবাইকে দেখার সুযোগ হয় না, কিন্তু সুযোগ হলেই মেয়েদের পোশাকের ডিজাইন দেখবই দেখব।

পুজোয় আলাদা করে কোনও প্ল্যান থাকে না। প্রত্যেক বছর পুজোয় ওপেনিং, জাজমেন্ট থাকে, পুজো পরিক্রমা থাকে। তো সেগুলো অষ্টমী অব্দি করি। এ বছর প্ল্যান আছে নবমীতে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার। নবমীতে গিয়ে লক্ষ্ণী পুজোর সময় ফিরব। তবে এখনও অব্দি কোথায়, কাদের সঙ্গে ঘুরতে যাব, না কি একা যাব, কিছুই ঠিক হয়নি। তিন-চার দিন ওই সময় শুটিং বন্ধ থাকবে। কিন্তু অনেক আগেই যদি ওই সময় শো এসে যায় তা হলে আর ঘুরতে যাওয়া হবে না। দেখা যাক কী হয়।

পুজোর সময় ইন্ডিয়ান ট্র্যাডিশনাল পোশাক পরতেই পছন্দ করি। হয় শাড়ি, নয় লেহেঙ্গা, না হলে বড় ঘেরওয়ালা এক কাটের... ঠিক গাউন বলা যাবে না... ইন্ডিয়ান আনারকলি সালোয়ার হলে যেমন হয় আর কি। তিন, চার রকমের মধ্যেই পরবো... চুড়িদার, আনারকলি, লেহেঙ্গা, শাড়ি। পোশাকগুলো হাতে পেয়ে গেলে কালার অনুয়ায়ী ঠিক করব কোনটার সঙ্গে কী গয়না পরবো, কী ধরনের লিপস্টিক বা আই করব। কোনও দিন খোঁপা করে ফুল দেব, কোনও দিন চুল ছেড়ে রেখে ফুল দেব। কোনও দিন হয়তো একটা বিনুনি করে কানে ঝুমকো পরবো। ঝুমকো পরতে খুব ভালবাসি, সিলভার ঝুমকো।

আরও পড়ুন: বন্ধুরাই আমার এ বারের পুজো মাতিয়ে রাখবে: মধুমিতা

গোল্ড পছন্দের নয়। কিন্তু কিছু কিছু শাড়ি, যেমন বেনারসি পরলে তাতে গোল্ডেন কালার থাকলে তার সঙ্গে গোল্ডেন গয়না ভাল লাগে। জেনারেলি সিলভার গয়না আমার পছন্দের। আমার অনেক সিলভার গয়না আছেও। মানে ইন্ডিয়ান সিলভার গয়না। আমি জয়পুর থেকেও সিলভার গয়না কিনে রেখেছি। পুজোয় সাজবো, প্রচুর সাজবো। পুজোর ক’দিন হালকা মেকআপ করবো। তবে চোখে কাজল হয়তো একটু বেশি থাকবে। লিপস্টিক পরবো ম্যাচিং করে। আদারওয়াইজ শুটিং ছাড়া মেকআপ করতে আজকাল পছন্দই করছি না।

তবে এখনও অব্দি কিচ্ছু শপিং হয়নি। সৈনিকের মতো কাজ করে চলেছি। সময় পাচ্ছি না। সামনে একটা অ্যাওয়ার্ড সেরিমনি আছে। সেখানে আমার ডান্স পারফরম্যান্স আছে। শুটিং শেষ করে সেখানে যাচ্ছি লড়াই করতে... হা হা হা... রিহার্সাল করতে। আমার এক জন ডিজাইনার আছে। ওকে আমি বলব পছন্দমতো কয়েকটা পোশাক বানিয়ে দিতে। তা হলে আর শপিং করার ঝামেলা থাকবে না। তবে শপিং করতে বেরোতেই হবে। সবাইকে গিফট দেওয়ার থাকে। সেগুলো কিনতে হবে। সেগুলো কেনার জন্যও একটা দিন দরকার। দেখি কবে বেরোতে পারি।

আরও পড়ুন: পুজোয় দেবলীনার সঙ্গেও আড্ডা হবে: গৌরব

প্রত্যেক বার পুজোর সময় মনে করি আড্ডা দেব। কিন্তু সময় হয় না। কি হয়, বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল অষ্টমী বা বিজয়া দশমীর আড্ডা অ্যারেঞ্জ করে। ওই রকম কোনও আড্ডায় গেলে আড্ডা হয়ে যায়। যাদের সঙ্গে হয়তো সারা বছর দেখাই হয়নি ওই সব আড্ডায় তাদের সঙ্গে দেখা হয়। আলাদা করে আর আড্ডা হয় না। বাড়ির লোকেদের সঙ্গেও পুজোর ক’দিন আড্ডার সময় পাই না। তবে হয়তো কোনও দিন দুপুরবেলা ফ্রি থাকলাম, সে দিন বাড়িতে খাওয়াদাওয়া হয়। হয়তো কোনও স্পেশাল রান্না হল, যেটা আমরা সবাই ভালবাসি। আমার মা চিলি চিকেনের মতো একটা পদ বানায়। ঠিক চিলি চিকেন নয়, কিন্তু আমরা চিলি চিকেনই বলি। যাই হোক, সেটা সব দিন তো হয় না, ওটা খেতে খুব ভালবাসি। ছোলার ডাল, লুচি খেতেও ভালবাসি। কোনও দিন হয়তো মাটন রান্না হল। মোট কথা, খেয়েদেয়ে দুপুরবেলা একটু আরাম করে ঘুমবো। সে রকম সুযোগ থাকলে এই সব খাওয়াগুলো হয়। কিন্তু খেয়েদেয়ে উঠেই ছুটতে হবে, এখানে যাওয়ার থাকবে, সেখানে যাওয়ার থাকবে— সে দিন এ সব খাওয়া হবে না। যে সব দিন একেবারেই ছুটি, বাড়িতে টিভি দেখব বা সিনেমা দেখব, হয়তো সন্ধ্যেবেলা ইচ্ছে হলে বেরবো, এ রকম কোনও দিন পেলে জমিয়ে খাওয়া হবে।

আমি তো বসিরহাটের মেয়ে। ওখানে প্রচুর দুর্গা পুজো হত, আমাদের পাড়ায়, পাশের পাড়ায়। এ রকমও হত যে আমাদের পাড়ারও মাইক বাজছে, পাশের পাড়াতেও মাইক বাজছে। দুটো গান ওভারল্যাপ করে যেত। ছোটবেলায় নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারতাম। ছোটবেলায় সবার অনেক জামাকাপড় হয়। আমারও হত। মনে আছে, প্রত্যেক দিন আমি চারটে করে জামা চেঞ্জ করতাম। মানে নতুন জামা পরে সারা ক্ষণ প্যান্ডেলেই থাকছি। সেই জিনিসটা মিস করি খুব।

একটা সময় বাবা যখন কিছু দিন কাজের সূত্রে বাইরে ছিলেন, আমি আর মা বসিরহাটে মামাবাড়িতে থাকতাম। মনে আছে, পুজোর সময় আমরা খুব ঘুরতাম। মহালয়ার দিন ভোর চারটেয় উঠে পড়তাম। ইছামতী নদীতে ঘুরতে যেতাম। দেখতাম, চারপাশে প্রচুর কাশফুল ফুটে আছে। ওই সুন্দর ভোর, প্রচুর শিউলি ফুল, দূষণহীন বাতাস খুব মিস করি। ঘুরে এসে আমরা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র’র কণ্ঠে মহালয়া শুনতাম। সেটা এখনও হয়। কিন্তু এখন ইচ্ছে করলে সারা বছর শোনা যায়। তখন আমরা ওই দিনটায় মহালয়া শোনার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE