বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়
শহরটা পাল্টে যাচ্ছে। রঙিন ছেলেমেয়ের মুখে আনন্দের আভা। ঢাকের শব্দ। মন্ত্রপাঠ। প্যান্ডেল বাঁধার আবহ শহর জুড়ে। পুজোর বিজ্ঞাপনে ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ, আলোর কাঠামো, প্রতিমা সবেতেই চলছে শিল্পীর ব্যস্ততার ছোঁয়া। শহরটা পাল্টে যাচ্ছে। পুজোর শব্দ, গন্ধ ও দৃশ্যে। শহর পাল্টে যাচ্ছে মানেই পুজো এসে গিয়েছে।
পুজোর সময় উৎসব উৎসব ব্যাপারটা ভালই লাগে। সবথেকে ভাল ক’দিন ছুটি পাওয়া যায়। বাড়ির মানুষ, বন্ধুবান্ধব সকলের সঙ্গে সারা বছরের তুলনায় বেশি সময় দেওয়া যায়। পুজোর সময় কলকাতাতেই থাকি। বাইরে যাই না। পুজো অন্য বার যে ভাবে কাটাই, এ বারেও সে ভাবেই কাটাবো। নাথিং স্পেশাল।
ছোটবেলায় পুজো মানেই যে একটা এক্সাইটমেন্ট থাকত, সেইটা যত দিন যাচ্ছে আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। ছোটবেলায় প্রচুর জামা হত, বন্ধুদের সঙ্গে কম্পিটিশন করে প্রায়। কোনও বন্ধুর দশটা তো কোনও বন্ধুর বারোটা জামা হত। এখন জামাকাপড়ের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, আনন্দগুলোও কমে যাচ্ছে। তবু তার মধ্যেও আমি উপভোগ করি, বাড়ি থেকে বার হই। হোল নাইট ঠাকুর দেখি। এক দিন পরিবারের লোকেদের সঙ্গে বেরোই, মাকে নিয়ে এক দিন আলাদা বেরই, বন্ধুদের সঙ্গে বেরই। আর বাইরে খাওয়া বলতে ফুচকা, ঘুগনি এ সব তো রয়েইছে। যদিও খুব বেশি ভিড় আমার ভাল লাগে না। তবু তার মধ্যেও ঠাকুর দেখি। জানি যে এ সময় একটু ভিড় হবেই। সকলের ছুটি। সবাই লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখবেই। আর এত সুন্দর সুন্দর প্যান্ডেল, থিম, পুজো সবাই ঠাকুর দেখবে সেটাই তো স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: বন্ধুরাই আমার এ বারের পুজো মাতিয়ে রাখবে: মধুমিতা
আমার বর অনির্বাণ যে পেশার সঙ্গে জড়িত সেখানে তো চার দিন, পাঁচ দিন ছুটি পায় না। হয়তো দু’দিন ছুটি পাবে। ওই দু’দিন আমরা বেরব। ও বাইরে বেরতে ভালবাসে। হয়তো ওর বন্ধুদের নিয়ে একসঙ্গে বেরব।
আরও পড়ুন: পুজোয় আড্ডা হবে বিশেষ মানুষের সঙ্গে: রাহুল
আমি সাজগোজের প্ল্যানিং একেবারেই করি না। কোনও দিনই করি না। আর আমি খুব বেশি সাজিও না। যতটা সিম্পল থাকা যায় ততই ভাল। শাড়িই পরব হয়তো। রঙের সে রকম কোনও প্রেফারেন্স নেই। তবে অঞ্জলির সময়ে যদি সাদা বা লাল পাড় গরদ শাড়ি পরা থাকে, তা হলে খুবই ভাল। অঞ্জলির সময় শাড়ির সঙ্গে সোনার গয়না পরতেই ভাল লাগে। তা ছাড়া অন্য দিনগুলোয় কী পরব আগে থেকে ঠিক থাকে না। জুয়েলারিও খুব একটা পরি না। খুব সিম্পল থাকতে ভালবাসি।
তবে হ্যাঁ, বিসর্জনের পরে উৎসব শেষ হয়ে যাওয়ার বিষণ্ণতা তো থাকেই। ছুটিও শেষ হয়ে যায়। পুরো দমে কাজে যোগ দিতে হয়। আগের রুটিনে ফিরতে হয়। শহর জুড়ে ভাঙা প্যান্ডেল দেখতে দেখতে সবার মতো আমিও কাজে মন দিই। কিন্তু তার মধ্যেও উৎসবের একটা রেশ লেগে থাকে। তখনও আকাশের নীল ফিকে হয় না। তুলোর মতো মেঘেদেরও দেখা যায়। শহরতলির কোনও গ্রামের দিকে শুট করতে গেলে তখনও চোখ জুড়িয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy