Advertisement
Durga Puja 2020

যতই অতিমারি আসুক, অষ্টমীর সকালের জন্য দুর্দান্ত শাড়ি দেবেই মা

‘নেই’–এর তালিকায় রয়েছে শপিংও। যদিও এ বছর প্রতিটি জামাকাপড়ের সঙ্গে সবার একটা করে ম্যাচিং মাস্ক মাস্ট।

এ বছর পুজোর তালিকায় অনেক কিছু ‘নেই’। বাইরে বেরোনো নেই। জিম, ডায়েটিং নেই। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

এ বছর পুজোর তালিকায় অনেক কিছু ‘নেই’। বাইরে বেরোনো নেই। জিম, ডায়েটিং নেই। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

স্বস্তিকা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:০০
Share: Save:

এই প্রথম জি বাংলার ‘মহালয়া’য় আমি আছি, ভ্রামরী দেবী রূপে। পুজোর আগেই তাই আমার পুজো জমে গিয়েছে। আমার দেবী বন্দনার শুরু মহালয়ায়, উপোস করে। আগে নির্জলা উপোস থাকতাম, আম্মার সঙ্গে। কিন্তু ত্বকে তার ছাপ পড়ে বলে এখন ফল আর জলের উপর থাকি। খুব ইচ্ছে করছে, এ বার ওই দিন কুমোরটুলিতে দেবীর চোখ আঁকা দেখতে যাব। জানি, কল টাইম থাকবে। হবে না!

আমাদের বাড়িতে পুজো হয়নি কোনও দিন। কিন্তু আম্মি-দাদার আমল থেকেই পুজো এলে ‘মা এসেছেন’ গন্ধে বাড়ি ম-ম করতে থাকে। গত বছরেও পুজোর চারটে দিন শো করেছি। সে সব বন্ধ এ বারে।

এ বছর পুজোর তালিকায় অনেক কিছু ‘নেই’। বাইরে বেরোনো নেই। জিম, ডায়েটিং নেই। বন্ধুদের সঙ্গে ফুচকা খেতে যাওয়া অনেক দিন আগেই বন্ধ। দেবীর মুখ অবশ্যই দেখব। একটু রাতে, গাড়িতে। ভেবেছিলাম পাহাড়ে বেড়াতে যাব, অরুণাচলের দিকে। পাহাড়ি পথ, নিস্তব্ধ সৌন্দর্য দারুণ লাগে। কিন্তু ঝুঁকি নিতে ভয় করছে। যদি আমার হাত ধরে অতিমারি ঢুকে পড়ে বাড়িতে! মা-বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে কী হবে? তাই ওটাও ক্যান্সেল। বদলে ঘর গুছোব। শোওয়ার ঘরটাকে সাজাব মনের মতো করে। তার কেনাকাটা শুরু করেছি। ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে ত্বকের যত্ন নেব। ওয়ারড্রোবটাকেও গোছাতে হবে। রোজ টান মেরে জামা বের করে পরে বেরিয়ে যাই। যা অগোছালো দশা!

‘নেই’–এর তালিকায় রয়েছে শপিংও। যদিও এ বছর প্রতিটি জামাকাপড়ের সঙ্গে সবার একটা করে ম্যাচিং মাস্ক মাস্ট। আমার বেশি আনন্দ ঠাকুরের পোশাক কিনে। শোওয়ার ঘরে শ্বেতপাথরের ছোট্ট মন্দির। সেখানে শিবলিঙ্গ, হনুমানজি, আরও অনেক দেবতা। তাঁদের জন্য প্রতি বছর নতুন পোশাক কিনি। নিজের জন্য নানা অজুহাতে শপিং চলতেই থাকে। পুজোয় আলাদা করে আর কিছুই সে রকম কেনার দরকার পরে না। তবে মা-বাবার থেকে হাত খরচের টাকা নিতে ভুলি না! ছোট থেকে এখনও পুজোয় চার দিনের আমার সমস্ত খরচ কেয়ার অব মা-বাবার।

আরও পড়ুন: বাঁকুড়ায় দেশের বাড়ির পুজোর একশো বছর, টেনশন হচ্ছে খুব

ভেবেছিলাম পাহাড়ে বেড়াতে যাব, অরুণাচলের দিকে। কিন্তু সবই বন্ধ এ বছর।

গত বছরে সাজের ট্রেন্ড ছিল এথনিক। শাড়ির বন্যা বয়েছিল। পোশাকও বেছে নিয়েছিলাম অভিজাত ঘরানার। এ বার স্বাদ পাল্টাব ইন্দো-ওয়েস্টার্ন দিয়ে। সঙ্গে মানানসই অ্যাক্সেসরিজ অবশ্যই। নিজের কেনাকাটায় দাঁড়ি টানলেও মা-বাবা এই তালিকায় পড়ছেন না। গত বছর বাবাকে ঘড়ি আর মাকে সোনার চূড় কিনে দিয়েছিলাম। এ বছরেরটা এখনও ঠিক করে উঠতে পারিনি। আসলে অতিমারি এ বছর সব

কিছুই ভীষণ অনিশ্চিত করে দিয়েছে। তবে এটা নিশ্চিত, অষ্টমীর সকালের জন্য মা প্রতি বছরের মতো এ বারেও একটা দুর্দান্ত শাড়ি দেবেই আমাকে।

আরও পড়ুন: অষ্টমীর সকালে আড় চোখাচোখি এবং ডেটিং: শন

ভরপেট পেটপুজো থাকবেই। ওটা ছাড়া পুজো জমে? পুজোয় আমার পাতে ইলিশ মাছের পাতুড়ি, ডাবচিংড়ি আর ঘি ভাত চাই-ই। আর চাই দেদার ঘুম, পরিবারের সবার সঙ্গে প্রচুর আনন্দ। শুধু একটা উপকরণ বহু বছর আমার শারদীয়া থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে। অষ্টমীর অঞ্জলি। যে বছর থেকে আম্মা ‘ছুটি’ নিয়েছেন বরাবরের মতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE