Advertisement
Durga Puja 2020

রুদ্রর সঙ্গে সারারাত ফোনে প্রেম, হুঁশ ফিরল ঢাকের আওয়াজে

লাল টুকটুকে শাড়ি হবে, মানানসই গয়না থাকবে, হালকা টাচআপ আর ছোট্ট টিপ, ব্যস প্রমিতা অষ্টমীর সাজে রেডি।

প্রমিতা চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ১৭:৩০
Share: Save:

বেলগাছিয়ার ওলাইচণ্ডী মন্দিরবাড়ির মেয়ে আমি। তিনশো বছরের পুরনো বাড়ি। ছোট থেকেই তাই কড়া নিয়মে বড় হয়েছি। পুজোর সময়ে প্রেম তো দূর, আড়চোখে তাকানোতেও ছিল অদৃশ্য নিষেধ। অথচ বড়বেলায় সেই বাড়ির মেয়ে, মানে এই আমার নাকি প্রেম হল সেই দুর্গা পুজোতেই! ঠিক প্রেম হল বলা চলে না, বলা ভাল প্রেমের কাব্যে নতুন পালক জুড়ল শারদ উৎসবেই। বুঝুন তবে। কী অদ্ভুত সমাপতন!

আসছি সে গল্পে। তবে তার আগে বরং পুজোর শপিং কী করলাম, একটু জানিয়ে দিই? এ বছর কিন্তু একদমই শপিংয়ে বেরোইনি। তা বলে কি পুজোয় নতুন পোশাক হবে না! মা আছে তো। এই কয়েক দিন আগে আমাকে বাদ দিয়েই চলে গেল কেনাকাটা করতে। ঘুরে ঘুরে পছন্দ করে আমার, বাড়ির বাকিদের, এমনকী আমার হবু শ্বশুরবাড়ির সকলের জন্যও জামাকাপড় কিনে আনল। একই সঙ্গে নিয়ে এল আমার সবচেয়ে পছন্দের লাল শাড়ি।

আসলে পুজোয় লাল শাড়ি না হলে আমার ঠিক ভাল লাগে না! লাল টুকটুকে শাড়ি হবে, মানানসই গয়না থাকবে, হালকা টাচআপ আর ছোট্ট টিপ, ব্যস প্রমিতা অষ্টমীর সাজে রেডি। দশমীতেও একটা লাল শাড়ি চাই আমার। এটা অবশ্য লাল পেড়ে হলেও চলবে। সিঁদুর খেলা রয়েছে তো। অফিশিয়ালি এখনও নাই বা হলাম রুদ্রজিতের বউ, কিন্তু সিঁদুর খেলা কী করে মিস করি বলুন তো!

আরও পড়ুন: দুর্গা পুজোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পছন্দ করে শাড়ি পাঠাবেন, অথচ নিজে কিচ্ছু নেবেন না!

তাই এ বারও হবে। করোনা তো কী? বাড়িতেই খেলব। জানেন, ‘বধূবরণ’-এর আগে বাইরে, পাড়ায় সবার সঙ্গে মিলে সিঁদুর খেলতাম। কত হইহই। এখন আর সে সব হয় না। সবাই চিনে ফেলে। অকারণে ভিড় জমে যায়। তবে হ্যাঁ, বাড়িতে আত্মীয়দের সঙ্গে কিন্তু পুজোর কটা দিন দেদার মজা। এ আবার বাড়তি পাওনা রুদ্রজিৎ।

আসলে পুজোয় লাল শাড়ি না হলে আমার ঠিক ভাল লাগে না!

বলতে গেলে এটাই আমার রুদ্রর সঙ্গে কাটানো প্রথম পুজো। কী ভাবছেন? সম্পর্কের বছর ঘুরে গিয়েছে, তা সত্ত্বেও প্রথম পুজো কেন বলছি? সে ভাবে হিসেব করলে অবশ্য ওর সঙ্গে আমার এটা তিন নম্বর পুজো। কিন্তু ওই যে বলে, যত দিন যায় সম্পর্ক আরও গভীরতা পায়। এ বছরটা কোথাও গিয়ে সেই গভীরতাই সামনে মেলে ধরেছে।

একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যাই। ‘সাত ভাই চম্পা’র শুট চলছে। সালটা ২০১৮। আমার আর রুদ্রর প্রেমটা সবে জমাট বাঁধতে শুরু করেছে তখন। পুজো এল, রুদ্র চলে গেল ওর দেশের বাড়ি পুরুলিয়ায়। আমি রয়ে গেলাম এখানে, মানে কলকাতায়। তাতে কী! পুজোর ওই ক’দিন ওর সঙ্গে ফোনে এত গল্প করেছি যে সদ্য ফোটা প্রেম জমে ক্ষীর হয়ে গিয়েছিল! এমনও হয়েছে, সারা রাত ফোনে কথা বলেছি। কখন ভোর হয়ে গিয়েছে খেয়ালও নেই। হুঁশ ফিরেছে ঢাকের আওয়াজে।

আরও পড়ুন: ভয় উড়িয়ে বাড়ির পুজোতেই ডবল মজা!

সে সব দিন ছিল বটে! এখন এই তিন বছর পরে ফিরে দেখতে বেশ লাগে। এ বার পুরুলিয়া যেতে পারি। প্রতি বার একা একাই রুদ্র ওখানে পুজো কাটায়। তাই এ বার ঠিক করেছি আমিও যাব। তবে কিছু অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। সেগুলো যদি করতে হয়, তবে কী হবে এখনও জানি না। দেখা যাক।

যাই হোক, সবাইকে বলব এ বার পুজোয় নিজেকে সুস্থ রেখে মজা করুন, প্রেম করুন। ছোটবেলায় আমার পুজো প্রেম হয়নি তো কী, প্রেম-মাখা পুজো তো কাটিয়েছি বড়বেলায়। হাজার হোক বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব বলে কথা!

ছবি সৌজন্য: শিলাদিত্য দত্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE