Advertisement
Television Actor

কালীপুজোয় হয় লক্ষ্মীপুজো, চালের গুঁড়োর মূর্তি করেন মা: বিশ্বজিৎ

এ বারে আমি ঠিক করেছি বাজি কিনব না, ফাটাবোও না।

বিশ্বজিৎ ঘোষ

বিশ্বজিৎ ঘোষ

বিশ্বজিৎ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:২৩
Share: Save:

কালীপুজোর দিন আমাদের বাড়িতে লক্ষ্ণীপুজো হয়, ছোটবেলা থেকেই দেখছি। এটাই আমাদের বাড়ির নিয়ম। অলক্ষ্ণী বিদায় করে লক্ষ্ণীপুজো হয়। চালের গুঁড়ো দিয়ে অলক্ষ্ণী, লক্ষ্ণী, নারায়ণ সবার মূর্তি তৈরি হয়। সব মূর্তিই আমার মা তৈরি করেন। তারপর পুরোহিত ঠাকুর এসে পুজো করেন।

আমার তো মনে হয় ভোগ মানেই খিচুড়ি আর লাবড়া। কিন্তু এখন অনেক আধুনিক ব্যাপার এসেছে, পোলাওকেও ভোগ বলে ধরা হচ্ছে। আমাদের বাড়ি খিচুড়িটাই হয়। খুব একটা বড় করে করা হয় না। কারণ মায়ের বয়স হয়েছে।

আগে বন্ধুবান্ধব আসত। এখন নিজেই সময় দিতে পারি না। তাই সে ভাবে কাউকে ডাকাও হয় না। তবে এ বারের পুজোটা স্পেশাল। কেননা আমার ছেলের এটাই প্রথম পুজো। ওর নাম আয়ান। মাস ছয়েক বয়স হল সবে। তবে এখনই যা দুরন্ত, ওকে সামলানো বেশ কঠিন। আমার তো সারাদিন স্টুডিওতেই কেটে যায়। আমার স্ত্রী অন্তরাই সব সামলায়।

ছেলেকে নিয়ে ভয়ও আছে। বাজি ফাটার শব্দে কী ধরনের রিয়্যাক্ট করবে জানি না। শব্দে ওর কোনও সমস্যা হবে কিনা তাও জানি না। সত্যি বলতে, এই নিয়ে একটু টেনশনেই আছি।

আরও পড়ুন: বাড়িতে লন্ডনে তৈরি আড়াইশো বছরের পুরনো কালীর পুজো হয়: হানি বাফনা

ছোটবেলায় দেখতাম এই দিন আমার দাদু প্রচুর বাজি ফাটাতেন। পুজোর ভোগ খাওয়ার জন্য পাড়ার প্রচুর লোকজন নিমন্ত্রিত থাকতেন। সবাই এসে গেলে সবাইকে নিয়ে দাদু বাজি ফাটাতেন। আর খাওয়া দাওয়া তো ছিলই। খাওয়া দাওয়ার স্মৃতি মনে করতে সব সময় ভাল লাগে।

আমি গত বছরও বাজি ফাটিয়েছি। তারপর বুঝতে পেরেছি বাজি মানে টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। সঙ্গে দূষণ তো আছেই। তাই এ বারে আমি ঠিক করেছি বাজি কিনব না, ফাটাবোও না। আমার নিজের বোন নেই। তবে আমার মাসির মেয়ে আছে, কাকার মেয়ে আছে, পিসির মেয়ে আছে। তারপর আমার পাতানো দুটো দিদি আছে। সবাই মিলে বেশ ভালই ভাইফোঁটা হয়। বোনেরা সবাই এখন বাড়িতে এসে ভাইফোঁটা দেয়। কিন্তু যখন কাজ করতাম না, তখন যে ভাবে দিনটা পালন করতে পারতাম এখন আর পারি না। আগে ঘোরাঘুরি, মজা, হইহুল্লোড় হত খুব। এখন আর সেটা হয় না। খুব কম সময়ের মধ্যে সবকিছু সেরে ফেলতে হয়।

উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কোনও ঝামেলায় যাই না। কে কী নেবে, কে কী পছন্দ করবে বোঝা খুব মুশকিল। তাই আমি অ্যামাজন গিফট কার্ড উপহার দিই। এখন এটাই আমার পক্ষে সবচেয়ে ভাল। আর সত্যি বলতে, আমার বোনেদের সেই সামর্থ্য নেই যে আমাকে প্রচুর ভাল ভাল উপহার দেবে। আগে আমিও কিছু দিতাম না, ওরাও কিছু দিত না। এটাই খুব ভাল ছিল। এই দেওয়া নেওয়ার ব্যাপারটা চলে এসে সম্পর্কের মধ্যে অনেক ব্যাপার চলে আসে। অনেকের মনে হয়, ভাল কিছু দিতে পারলাম না। হীনমন্যতা চলে আসে। এগুলো না থাকলে সত্যি খুব ভাল হত। আগের দিনগুলোই ভাল ছিল যখন ঘোরা আর খাওয়াটাই প্রধান ব্যাপার ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE