Advertisement
Kali Puja 2020

কোথাও মুক্তকেশী, দিগম্বরী, কোথাও তাঁর ৩০ চোখ! কালীর নানা রূপ নিয়ে পুরাণেও রয়েছে বিভিন্ন মত

তন্ত্রমতে পূজিত প্রধান ১০ জন দেবীর মধ্যে প্রথম দেবী কালী। শাক্তরা কালীকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ মনে করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০ ০৯:০০
Share: Save:
০১ ১৯
মা কালী শাস্ত্রমতে শক্তির উপাসকদের দেবী। তার অপর নাম শ্যামা বা আদ্যাশক্তি। তন্ত্রশাস্ত্র মতে, তিনি দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত। তন্ত্রমতে পূজিত প্রধান ১০ জন দেবীর মধ্যে প্রথম দেবী কালী। শাক্তরা কালীকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ মনে করেন।

মা কালী শাস্ত্রমতে শক্তির উপাসকদের দেবী। তার অপর নাম শ্যামা বা আদ্যাশক্তি। তন্ত্রশাস্ত্র মতে, তিনি দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত। তন্ত্রমতে পূজিত প্রধান ১০ জন দেবীর মধ্যে প্রথম দেবী কালী। শাক্তরা কালীকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ মনে করেন।

০২ ১৯
তন্ত্র ও পুরাণে দেবী কালীর একাধিক রূপভেদের উল্লেখ রয়েছে। একটি বিশেষ তন্ত্র মতে কালী অষ্টধা বা অষ্টবিধ। যথা- দক্ষিণাকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, মহাকালী, ভদ্রকালী, চামুণ্ডাকালী, শ্মশানকালী ও শ্রীকালী।

তন্ত্র ও পুরাণে দেবী কালীর একাধিক রূপভেদের উল্লেখ রয়েছে। একটি বিশেষ তন্ত্র মতে কালী অষ্টধা বা অষ্টবিধ। যথা- দক্ষিণাকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, মহাকালী, ভদ্রকালী, চামুণ্ডাকালী, শ্মশানকালী ও শ্রীকালী।

০৩ ১৯
মহাকাল সংহিতা অনুসারে আবার কালী নববিধা। এই তালিকা থেকেই পাওয়া যায় কালকালী, কামকলাকালী, ধনদাকালী ও চণ্ডিকাকালীর নাম।

মহাকাল সংহিতা অনুসারে আবার কালী নববিধা। এই তালিকা থেকেই পাওয়া যায় কালকালী, কামকলাকালী, ধনদাকালী ও চণ্ডিকাকালীর নাম।

০৪ ১৯
দক্ষিণাকালী- কালো রূপে দিগম্বরী শ্যামা মা, এই কালীকেই বলছেন রামপ্রসাদ। দক্ষিণাকালীই কালীর সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ মূর্তি। দক্ষিণাকালী করালবদনা, ঘোরা, মুক্তকেশী, চতুর্ভূজা এবং মুণ্ডমালাবিভূষিতা। অর্থাৎ খোলা চুলের এই দেবীর গলায় মুণ্ডমালার হার।

দক্ষিণাকালী- কালো রূপে দিগম্বরী শ্যামা মা, এই কালীকেই বলছেন রামপ্রসাদ। দক্ষিণাকালীই কালীর সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ মূর্তি। দক্ষিণাকালী করালবদনা, ঘোরা, মুক্তকেশী, চতুর্ভূজা এবং মুণ্ডমালাবিভূষিতা। অর্থাৎ খোলা চুলের এই দেবীর গলায় মুণ্ডমালার হার।

০৫ ১৯
দক্ষিণাকালীর চারটি হাতের মধ্যে তাঁর দুই বাম হাতে সদ্যছিন্ন নরমুণ্ড ও খড়্গ। দুই ডান হাতে বর ও অভয় মুদ্রা।

দক্ষিণাকালীর চারটি হাতের মধ্যে তাঁর দুই বাম হাতে সদ্যছিন্ন নরমুণ্ড ও খড়্গ। দুই ডান হাতে বর ও অভয় মুদ্রা।

০৬ ১৯
দক্ষিণাকালী ত্রিনয়নী এবং মহাদেবের বুকে দণ্ডায়মান। তাঁর ডান পা শিবের বক্ষে স্থাপিত। কেন এই নাম দেবীর?

দক্ষিণাকালী ত্রিনয়নী এবং মহাদেবের বুকে দণ্ডায়মান। তাঁর ডান পা শিবের বক্ষে স্থাপিত। কেন এই নাম দেবীর?

০৭ ১৯
শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে দক্ষিণ দিকের অধিপতি যম এই কালীর ভয়ে পালিয়ে যান। তাই এই কালীর নাম দক্ষিণাকালী।

শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে দক্ষিণ দিকের অধিপতি যম এই কালীর ভয়ে পালিয়ে যান। তাই এই কালীর নাম দক্ষিণাকালী।

০৮ ১৯
কালীর একটি অখ্যাত রূপ হল সিদ্ধকালী। গৃহস্থ বাড়িতে তাঁর পুজো হয় না। তবে কালীতন্ত্রে তাঁর দ্বিভূজা রূপের উল্লেখ রয়েছে। এই কালী সালঙ্কারা অর্থাৎ গয়না পরে থাকেন। ইনি তন্ত্রসাধকদের আরাধ্যা।

কালীর একটি অখ্যাত রূপ হল সিদ্ধকালী। গৃহস্থ বাড়িতে তাঁর পুজো হয় না। তবে কালীতন্ত্রে তাঁর দ্বিভূজা রূপের উল্লেখ রয়েছে। এই কালী সালঙ্কারা অর্থাৎ গয়না পরে থাকেন। ইনি তন্ত্রসাধকদের আরাধ্যা।

০৯ ১৯
গুহ্যকালী- গুহ্যকালী বা আকালীও গৃহস্থ বাড়িতে পূজিতা নন। তিনি সাধকদের আরাধ্যা। তাঁর রূপকল্পকে ভয়ঙ্কর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে শাস্ত্রে। গুহ্যকালীর গায়ের রং গাঢ় মেঘের মতো। তিনি লোলজিহ্বা ও দ্বিভুজা। গলায় ৫০টি নরমুণ্ডের মালা। কোমরে ছোট কালো কাপড়। কানে শবদেহরূপী অলঙ্কারও রয়েছে।

গুহ্যকালী- গুহ্যকালী বা আকালীও গৃহস্থ বাড়িতে পূজিতা নন। তিনি সাধকদের আরাধ্যা। তাঁর রূপকল্পকে ভয়ঙ্কর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে শাস্ত্রে। গুহ্যকালীর গায়ের রং গাঢ় মেঘের মতো। তিনি লোলজিহ্বা ও দ্বিভুজা। গলায় ৫০টি নরমুণ্ডের মালা। কোমরে ছোট কালো কাপড়। কানে শবদেহরূপী অলঙ্কারও রয়েছে।

১০ ১৯
মহাকালীর রূপ নিয়ে দু’টি মত রয়েছে। তন্ত্রসার গ্রন্থমতে, মহাকালীর ৫ মুখ, ১৫ চোখ। তবে শ্রীশ্রীচণ্ডী মতে আদ্যাশক্তিকে ১০ মুখ, হাত, পা ও ৩০০ চোখের দেবী রূপে কল্পনা করা হয়েছে।

মহাকালীর রূপ নিয়ে দু’টি মত রয়েছে। তন্ত্রসার গ্রন্থমতে, মহাকালীর ৫ মুখ, ১৫ চোখ। তবে শ্রীশ্রীচণ্ডী মতে আদ্যাশক্তিকে ১০ মুখ, হাত, পা ও ৩০০ চোখের দেবী রূপে কল্পনা করা হয়েছে।

১১ ১৯
শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে,  ইনি সাধনপর্বে ভক্তকে উৎকট ভীতি প্রদর্শন করলেও শেষ পর্যন্ত ভক্তকে রূপ, সৌভাগ্য, কান্তি ও শ্রী প্রদান করেন।

শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, ইনি সাধনপর্বে ভক্তকে উৎকট ভীতি প্রদর্শন করলেও শেষ পর্যন্ত ভক্তকে রূপ, সৌভাগ্য, কান্তি ও শ্রী প্রদান করেন।

১২ ১৯
দুর্গা ও সরস্বতীর অপর নাম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে ভদ্রকালী শব্দটি। ভদ্রকালী নামের ভদ্র শব্দের অর্থ কল্যাণ এবং কাল শব্দের অর্থ শেষ সময়। যিনি মরণকালে জীবের মঙ্গল করেন, তিনিই ভদ্রকালী।

দুর্গা ও সরস্বতীর অপর নাম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে ভদ্রকালী শব্দটি। ভদ্রকালী নামের ভদ্র শব্দের অর্থ কল্যাণ এবং কাল শব্দের অর্থ শেষ সময়। যিনি মরণকালে জীবের মঙ্গল করেন, তিনিই ভদ্রকালী।

১৩ ১৯
দুই রকম মত রয়েছে ভদ্রকালীকে নিয়ে। কালিকাপুরাণ মতে, ভদ্রকালীর গায়ের রং অতসী ফুলের মতো। মাথায় জটা, কপালে অর্ধচন্দ্র ও গলায় কণ্ঠহার।

দুই রকম মত রয়েছে ভদ্রকালীকে নিয়ে। কালিকাপুরাণ মতে, ভদ্রকালীর গায়ের রং অতসী ফুলের মতো। মাথায় জটা, কপালে অর্ধচন্দ্র ও গলায় কণ্ঠহার।

১৪ ১৯
তন্ত্রমতে অবশ্য ভদ্রকালী কালির মতো কৃষ্ণবর্ণা, কোটরাক্ষী, মুক্তকেশী। তিনি জগৎকে গ্রাস করছেন। তাঁর হাতে জ্বলন্ত অগ্নিশিখাও রয়েছে।

তন্ত্রমতে অবশ্য ভদ্রকালী কালির মতো কৃষ্ণবর্ণা, কোটরাক্ষী, মুক্তকেশী। তিনি জগৎকে গ্রাস করছেন। তাঁর হাতে জ্বলন্ত অগ্নিশিখাও রয়েছে।

১৫ ১৯
ভক্ত ও সাধকদের কাছে কালীর একটি প্রসিদ্ধ রূপ চামুণ্ডাকালী বা চামুণ্ডা। দেবীভাগবত পুরাণ ও মার্কণ্ডেয় পুরাণের বর্ণনা অনুযায়ী, চামুণ্ডা চণ্ড ও মুণ্ড নামক দুই অসুর বধের জন্য দেবী দুর্গার কুঁচকে যাওয়া কপাল থেকে উৎপন্ন হন।

ভক্ত ও সাধকদের কাছে কালীর একটি প্রসিদ্ধ রূপ চামুণ্ডাকালী বা চামুণ্ডা। দেবীভাগবত পুরাণ ও মার্কণ্ডেয় পুরাণের বর্ণনা অনুযায়ী, চামুণ্ডা চণ্ড ও মুণ্ড নামক দুই অসুর বধের জন্য দেবী দুর্গার কুঁচকে যাওয়া কপাল থেকে উৎপন্ন হন।

১৬ ১৯
ভাগবতপুরাণ বলছে, দেবী চামুণ্ডার পরিধানে ব্যাঘ্রচর্ম; অস্তিচর্মসার শরীর ও বিকট দাঁত। অগ্নিপুরাণে ৮ রকম চামুণ্ডার কথা বলা হয়েছে। তাঁর মন্ত্রও অনেক।

ভাগবতপুরাণ বলছে, দেবী চামুণ্ডার পরিধানে ব্যাঘ্রচর্ম; অস্তিচর্মসার শরীর ও বিকট দাঁত। অগ্নিপুরাণে ৮ রকম চামুণ্ডার কথা বলা হয়েছে। তাঁর মন্ত্রও অনেক।

১৭ ১৯
কালীর শ্মশানকালী রূপের পূজা সাধারণত শ্মশানেই হয়ে থাকে। এই দেবীকে শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনে করা হয়।

কালীর শ্মশানকালী রূপের পূজা সাধারণত শ্মশানেই হয়ে থাকে। এই দেবীকে শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনে করা হয়।

১৮ ১৯
প্রাচীনকালে ডাকাতেরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে শ্মশানঘাটে নরবলি দিয়ে শ্মশানকালীর পূজা করত। কালীপুজোর উল্লেখ রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরানি উপন্যাসেও। তবে গৃহস্থ বাড়িতে এই কালীর পুজো হয় না। ছবি- প্রতীকী

প্রাচীনকালে ডাকাতেরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে শ্মশানঘাটে নরবলি দিয়ে শ্মশানকালীর পূজা করত। কালীপুজোর উল্লেখ রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরানি উপন্যাসেও। তবে গৃহস্থ বাড়িতে এই কালীর পুজো হয় না। ছবি- প্রতীকী

১৯ ১৯
গুণ ও কর্ম অনুসারে কালীর অপর একটি রূপ হল শ্রীকালী। অনেকের মতে এই রূপে তিনি দারুক নামে এক ভয়ঙ্কর অসুর বধ করেন। ইনি মহাদেবের শরীরে প্রবেশ করে তাঁর কণ্ঠের বিষে কৃষ্ণবর্ণা হয়েছেন। পরে মহাদেব শিশুবেশে স্তন্যপান করে বিষ গ্রহণ করেন তাঁর শরীর থেকে।

গুণ ও কর্ম অনুসারে কালীর অপর একটি রূপ হল শ্রীকালী। অনেকের মতে এই রূপে তিনি দারুক নামে এক ভয়ঙ্কর অসুর বধ করেন। ইনি মহাদেবের শরীরে প্রবেশ করে তাঁর কণ্ঠের বিষে কৃষ্ণবর্ণা হয়েছেন। পরে মহাদেব শিশুবেশে স্তন্যপান করে বিষ গ্রহণ করেন তাঁর শরীর থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE