অভিনেত্রী জয়া আহসান।
‘পুজো ট্রেন্ড’ বলে কিছু হয় না। এ বারের পুজো ফ্যাশন নিয়ে জানতে চাওয়ায় সাফ জানালেন ডিজাইনার চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরা।
ঋতু অনুযায়ী পোশাক নিয়ে নানা ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করাতেই বিশ্বাসী চন্দ্রাণী। এ বারের পুজোর জন্য হ্যান্ডলুমের দিকেই ঝুঁকছেন তিনি। ‘‘হাতে বোনা খাদি, কটন, লিনেন, সিল্ক, আমাদের নিজেদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার সময় এটা। আর হ্যান্ডলুম আমাদের দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে যেমন মানানসই, তেমনই এর রং আর প্রিন্ট খুব স্ট্রাইকিং, যেটা উৎসবের আমেজের সঙ্গে মিশে যায়।’’ যোগ করলেন চন্দ্রাণী।
নরম কাপড়ের বুনোটে এ বারের চল ফ্লোরাল আর অ্যানিমাল প্রিন্ট। তবে যে কোনও প্রিন্টের ক্ষেত্রেই খুব বড় ফুল বা বড় বড় মুখের দিকে যেতে বারণ করছেন চন্দ্রাণী। পুজোয় নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার হুজুগ থেকে বেরিয়ে এসে একটু অন্য রাস্তায় চলতে বলছেন তিনি। যেমন বোল্ড প্রিন্টের জায়গায় ছোট ছোট প্রিন্ট। ববি প্রিন্ট। পোলকা ডটস্। হরাইজন্টাল স্ট্রাইপের চোখে আরাম দেওয়া নরম খেলায় মেতে ওঠার পরামর্শ দিচ্ছেন চন্দ্রাণী।
আরও পড়ুন: চুল নিয়ে চুলচেরা সাজগোজ
‘‘আমরা কেউ নায়িকা নই। আমাদের সকলের জিরো ফিগার নয়। তাই নিজেকে সাহসী দেখানোর জন্য বা সকলের নজর কাড়ার জন্য প্লিজ এমন কিছু করে ফেলবেন না যার ফল সম্পূর্ণ উল্টো হয়।’’
পুজোর সময় দারুণ একটা চমক দেবেন বলে যদি ভাবেন, অষ্টমীর সন্ধে আড্ডায় পিঠ খোলা, ডিপ নেক বা হল্টার ব্লাউজ পড়ে ট্রান্সপারেন্ট শাড়ির সঙ্গে টিম আপ করলেন! ভুল হতে পারে।
চন্দ্রাণী বলছেন, ‘‘সেক্সি কেউ হয়ে উঠতে পারে না। এটা রোগা, মোটা বা শুধু শাড়ি-ব্লাউজ না পরারও বিষয় নয়। ওটা ভিতর থেকে আসে। বরং সুন্দর অলিভ রঙের হ্যান্ডলুম শাড়ির সঙ্গে যদি পিঠবন্দি রানি রঙের ব্লাউজ পরে সামনের নেক লাইনটা ডিপ রাখেন... সেখানেই থাকবে সব রহস্য।’’
আরও পড়ুন: পুজোয় জেল্লাদার ত্বক চান! এখন থেকেই প্রস্তুতি নিন
কমবয়সী মেয়েদের জন্য চন্দ্রাণী পড়তে বলছেন পালাজো, ভিতরে একরঙা টি শার্ট আর তার উপরে গ্লিটার জ্যাকেট। এই গ্লিটার জ্যাকেট এ বারের পুজোর বহু হৃদয়ে ঝড় তুলবে। ইচ্ছে হলে সেরকম ফ্যাব্রিক কিনে দর্জিকে দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন বলে জানাচ্ছেন চন্দ্রাণী। পরতে পারেন ধোতি প্যান্ট আর কুর্তা।
পালাজো দিয়ে পায়ের সব কিছু যদি আড়াল রাখতে না চান তো মিডি স্কার্ট পরুন, শার্ট আর চওড়া বেল্টের সঙ্গে। বলা যায় না সঙ্গের স্লিং ব্যাগ, আর হালকা কাজল দেখে পুরনো হিন্দি ছবির শ্রীদেবীকে মনে করিয়ে দিতে পারে আপনার এই সাজ!
গাউন, ম্যাক্সি ড্রেস বা হাই এন্ড লো ড্রেস অবশ্যই রাখুন সপ্তমীর সকাল বা সন্ধের জন্য। কটন বা লিজিবিজি ফ্যাব্রিকে এই পোশাক নতুনত্ব আনবে। মলমলের ড্রেসের সঙ্গে স্কার্ফ জড়িয়ে নিতে পারেন বা ম্যাক্সি ড্রেসের সঙ্গে লং জ্যাকেট।
এক্সপেরিমেন্ট করার জায়গা থেকে পরতে পারেন শেরওয়ানি। চমকে দিলেন চন্দ্রাণী। 'আসলে পুরুষরা যেমন মেয়েদের পাটিওয়ালা পরছেন...ফ্যাশনকেও সবসময় জেন্ডারে আটকে রাখা যায় না' যোগ করলেন চন্দ্রাণী।
আরও পড়ুন: মিডি ড্রেসে সেক্সি
অ্যাক্সেসারিজের দিকেও বিশেষ নজর দিতে বলছেন চন্দ্রাণী। যেমন মিড ড্রেসের সঙ্গে নূপুর। 'দেখবেন নূপুর যেন ঝমঝম করে বেজে না ওঠে। সঙ্গে পড়ুন স্লিপার। প্রচুর চুড়ি পরতে পারেন। গলায় কিছু পরলে কান খালি রাখুন'।
পুজোর জন্য ফ্যাশানের ডালি এক্কেবারে সাজিয়ে দিচ্ছেন চন্দ্রাণী।
ছেলেদের পোশাকে ধুতি পঞ্জাবি, বা জিনস পাঞ্জাবি তো থাকেই। তবে চন্দ্রাণী জোর দিচ্ছেন জহর কোট বা জ্যাকেটের ওপর। আর সেখানে নতুনত্ব আনার জন্য প্রিন্টেড জ্যাকেটের সঙ্গে একরঙা টি শার্ট আর প্যান্ট দিয়ে টিম আপ করা যেতে পারে বলে বলছেন চন্দ্রাণী। অ্যাসিমেট্রিক পাঞ্জাবিও এবার পুজোর বাজার মাতাবে বলে মনে করছেন চন্দ্রাণী।
পুজোর রঙ: সাদা সকলের জন্য। ছেলেরা এ বার গোলাপি, লাল, সবুজ। আর মেয়েরা একটু ডাল কালারের দিকে যেমন লাইম গ্রিন, বিস্কিট রঙ, রানি, হলুদ।
চন্দ্রাণীর সাবধান বাণী একটাই: ‘‘দেখবেন সব পরে ক্রিস্টমাস ট্রি হয়ে যাবেন না!’’
—ছবি সৌজন্যে: চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy