পুজোয় বেড়াতে যেতে চান কাছেপিঠে? কোন বিষয়ে খেয়াল রাখতেই হবে
কীভাবে যাবেন, কোথায় যাবেন, কী কী সাবধানতা নেবেন, তা ভেবে মনে দুশ্চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে অহরহ৷ কাছে-পিঠে বেড়ানোর পরিকল্পনা থাকলে কী মনে রাখবেন?

গৃহবন্দি থাকার পর পূজোর এই আবহে কি আর ঘরে থাকা যায়! আস্তে আস্তে পর্যটনের গন্তব্যগুলি খুলে যাচ্ছে। হোটেলগুলিও পর্যটকদের জন্য দ্বার খুলে দিচ্ছে ধীরে ধীরে। মন চাইছে বেড়াতে যেতে। কীভাবে যাবেন, কোথায় যাবেন, কী কী সাবধানতা নেবেন, তা ভেবে মনে দুশ্চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে অহরহ৷ কাছে-পিঠে বেড়ানোর পরিকল্পনা থাকলে কী মনে রাখবেন?
পরিকল্পনা করুন নিয়ম মেনে
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর কথায়, “বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক সদস্যকে নিয়ে বেড়ানোর পরিকল্পনা করবেন না৷ কোভিডের কো-মর্বিডিটি, অর্থাৎ ওবেসিটি, হাই প্রেশার-সুগার, হৃদরোগ, হাঁপানি, কিডনির অসুখ ইত্যাদি না থাকলেও এ বার বেরনো ঠিক নয়৷ বাচ্চাদের কোভিডের আশঙ্কা কম, তাও তাদের নিয়ে বেরবেন না৷”
কী কী খেয়াল রাখবেন
১. যে সব জায়গায় কোভিড বেশি হচ্ছে, সে সব জায়গায় যাওয়া যাবে না৷ পাহাড়-জঙ্গল ভাল, কারণ সেখানে ভিড় কম হয়৷ তবে সিমলা, মানালি, গ্যাংটক, দার্জিলিঙের মতো পাহাড় নয়৷ একটু অফ-বিট জায়গা বাছুন৷ তবে সেখানে বেড়ানোর খরচ কিন্তু বেশি, সেটা মাথায় রাখবেন৷
২· সুবর্ণবাবুর কথায়, “লম্বা বেড়ানোর পরিকল্পনা না করে যাতায়াত-সহ ৫-৭ দিনের মধ্যে ফিরে আসা যাবে এমন জায়গায় যান৷ চেষ্টা করুন একই হোটেলে থাকতে৷ গ্রুপ টু্র নয়।”
আরও পড়ুন: পুজোর সময় রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে এই সব মানতেই হবে
৩· হোটেল বুক করার সময় তাদের স্যানিটাইজেশনের সিস্টেম জেনে নিন৷ ঘর ও সংলগ্ন স্থান ভাল করে স্যানিটাইজ করা হবে কি না, খাবার যাঁরা বানাবেন ও পরিবেশন করবেন তাঁরা সব রকম সুরক্ষাবিধি মেনে চলবেন কি না সেসব জেনে নিন আগে৷ নিশ্চিত হয়ে তবেই বেড়াতে যান।
৪· কম দূরত্বের জায়গা হলে বিমানে যাওয়া ভাল৷ বিমান বদ্ধ জায়গা হলেও, কম সময় থাকা হয় বলে বিপদ কমে৷
৫· বেড়ানোর জন্য শেয়ার গাড়ি না নিয়ে আলাদা গাড়ি নিন৷ গাড়ি স্যানিটাইজ করা হয় কি না খেয়াল রাখুন।
লম্বা বেড়ানোর পরিকল্পনা না করাই ভাল। ছবি: ফাইল ছবি।
কী কী নেবেন সঙ্গে
সুবর্ণবাবুর পরামর্শ-
- দু-তিন দিনের জন্য বেরলেও প্রচুর মাস্ক, স্যানিটাইজার ও কিছু অতিরিক্ত জামা-কাপড় নিয়ে নিন৷
- সাধারণ ওষুধের সঙ্গে প্যারাসিটামল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, ভিটামিন সি নেবেন৷
- থার্মোমিটার নিতে হবে।
- পালস অক্সিমিটার সঙ্গে নিতে হবে।
- কিছু শুকনো খাবার রাখতে হবে সঙ্গে৷ টাটকা ও শুকনো ফল নিতে হবে।
আরও পড়ুন: অন্য রকম শারদীয়ায় এই সব মানলেই মন ভাল, নিরাপদে কাটবে পুজো
যাত্রাপথে ও হোটেলে
- এক শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড স্প্রে সঙ্গে রাখুন৷ ট্রেন, প্লেন, গাড়ির সিট বসা বা শোওয়ার আগে ভাল করে স্যানিটাইজ করে নিন৷ হাত পরিষ্কার করার জন্য ৭০ শতাংশ অ্যালকোহল আছে এমন স্যানিটাইজার রাখুন সঙ্গে৷
- বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশের কভার ব্যবহার করুন৷
- ট্রেনে, বাসে, বিমানে, গাড়িতে মাস্ক খুলবেন না৷ খাবার খাবেন না বদ্ধ জায়গায়।
- হোটেলে ঢোকার সময় ঘর, লবি ঠিকঠাক স্যানিটাইজ হয়েছে কিনা দেখে নিন৷ ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ পেলে বুঝবেন সব ঠিক আছে৷
- রিসেপশনের লোকজন, কর্মী ও রান্নাঘরের লোকেদের মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরা আছে কিনা, তাঁরা ঘন ঘন হাত স্যানিটাইজ করছেন কি না, সে সবও দেখে নিন৷
- পরিচয়পত্র বা ক্রেডিট কার্ড স্যানিটাইজ করে তবেই ব্যাগে ভরতে হবে।
ট্রেন, বিমান, গাড়িতে বসার আগে সিট ভাল করে স্যানিটাইজ করে নিন৷ ফাইল ছবি।
আরও পড়ুন: করোনা আবহে কীভাবে গাড়ি স্যানিটাইজ করবেন? জেনে নিন
কেমন খাবার খেতে হবে-
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে কিছু নিদান দিয়েছেন। সে গুলি হল-
- হোটেল রান্না করা গরম খাবার খেতে হবে।
- যে পাত্রে খাবার দেওয়া হবে তা গরম জল ও সাবানে ধুয়ে নেওয়া হয় যাতে খেয়াল রাখতে হবে।
- মাস্ক পরে তো খাওয়া যাবে না, কাজেই একটু দূরে দূরে বসে খেতে হবে৷
- এক সঙ্গে খাবার ব্যবস্থা বা বাফে লাঞ্চ থাকলে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতেই হবে।
- প্যাকেটের খাবার ও খোসা ছাড়িয়ে খেতে হয় এমন ফল খেতে পারেন৷
- জল হালকা গরম করে খেতে পারলে ভাল৷