Advertisement
Durga Puja Celebration

ট্রেনে বেড়াতে যাচ্ছেন? জেনে নিন কিছু জরুরি তথ্য

যাত্রার আগে টিকিট হারিয়ে গেলে অথবা ছিঁড়ে গেলে কী করবেন জানেন?

সমীর গোস্বামী
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ২১:০০
Share: Save:

পুজো মানে দুর্গাপুজো। ছোট্ট শব্দটায় কী জাদু আছে কে জানে, যেখানে যত বাঙালি আছেন, সারা বছর তাকিয়ে থাকেন এই চারটি দিনের দিকে। আগে থেকে বিস্তর পরিকল্পনা। আর এসে গেলে তো কথাই নেই। পুরোমাত্রায় ‘চার্জড’ হয়ে যান। মেতে ওঠার কোনও সীমা থাকে না।

পুজোয় আনন্দলাভের যে উপকরণগুলি আছে, বেড়াতে যাওয়া তার অন্যতম। পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া কয়েক ধরনের মানুষ দেখা যায়। অনেকে আছেন মহালয়ার পরে দু’-এক দিন পুজো দেখে মাঝখানে বেরিয়ে পড়েন। বাকিরা পুজো শেষ করে বেড়াতে যান।

যে যখনই যান, একটা ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষের মিল— সেটা হচ্ছে ট্রেন ভ্রমণ। সেটাও কম আনন্দের নয়। ট্রেন ভ্রমণের আনন্দ নিশ্চিত করতে বা বলা ভাল পুরো ভ্রমণটাই সর্বাঙ্গসুন্দর করতে বেড়াতে যাওয়ার ঠিক প্রাক্কালে রেলের কিছু নিয়ম সম্পর্কে পরামর্শ বোধহয় দেওয়া যেতে পারে:

আরও পড়ুন: অসুখের ভ্রূকুটিতে পুজোর আনন্দে কাটছাঁট? রইল দরকারি সমাধান​

আরও পড়ুন: পুজোয় কী অসুখে কোন হোমিওপ্যাথি ওষুধ কাজে আসবে, জানেন?​

রেলের ৩টি হেল্পলাইন রয়েছে—

যে কোনও অনুসন্ধানের জন্য ১৩৮

রিজার্ভেশন ও ট্রেন চলাচলের জন্য ১৩৯

আরপিএফের সহায়তা দরকার হলে ১৮২

একই পরিবারের সদস্য, যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন, পুত্র-কন্যা, স্বামী-স্ত্রী হলে কমপক্ষে যাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগে প্রমাণ-সহ লিখিত আবেদন করলে, যে ব্যক্তির নামে টিকিট কাটা আছে, তাঁর বদলে পরিবারের অন্য কেউ যাত্রা করতে পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সবটাই নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট রেল অফিসারের সিদ্ধান্তের উপর।

আরও চারটি ক্ষেত্রে, যেমন সরকারি চাকরি, সরকারি প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া, এনসিসি-র সদস্য বা বিয়ে উপলক্ষে অনেকে মিলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও একই ভাবে যাত্রী পরিবর্তন সম্ভব।

যে স্টেশনের টিকিট কাটা আছে তার পরেও যাত্রা বর্ধিত করতে হলে টিকিট পরীক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাত্রার দূরত্ব বর্ধিত করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে বাড়তি যাত্রাপথের টিকিট কাটতে হবে।

৪৯৭টি বড় স্টেশনে রেলের রিটায়ারিং রুম (এসি বা নন এসি) ও ডর্মিটরি স্টেশন অনুযায়ী নির্দিষ্ট মূল্যে ভাড়া পাওয়া যায়। তবে দু’দিনের বেশি বুকিং হয় না। আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইট বা গন্তব্য স্টেশনে গিয়ে টিকিটধারী যাত্রীরা বুক করতে পারেন।

বড় স্টেশনে ‘ক্লোক রুম’ও থাকে। এখানে জিনিসপত্র রেখে ঘুরে আসতে পারেন। তবে অবশ্যই জিনিসপত্রে তালা লাগাতে হবে। এর জন্য মাল পিছু প্রথম ২৪ ঘণ্টার জন্য ১৫ টাকা হারে এবং পরবর্তী প্রতি ঘণ্টা বা সর্বাধিক ২৪ ঘণ্টার জন্য ২০ টাকা হারে মূল্য দিতে হবে।

ট্রেনে পোষ্য নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যদি এসি ফার্স্ট ক্লাস বা পুরনো ফার্স্ট ক্লাস কামরায় ২ বা ৪ বার্থ কেবিন বুক করা থাকে তা হলে সঙ্গে নিতে পারেন প্রিয় পোষ্যকে। অথবা খাঁচার মতো বাক্সে (ডগ বক্স) বন্ধ করে ট্রেনের গার্ডের কামরায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। দুই ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট হারে অগ্রিম বুকিং করতে হয়। ন্যূনতম মূল্য ৩০ টাকা। বড় স্টেশনে যেখানে বেশি ক্ষণ ট্রেন থামবে সেখানে পোষ্যকে খাইয়ে দেওয়া যায়।

আনন্দে সবাই বেড়াতে যাবেন। সঙ্গে অসুস্থ কেউ থাকলে অহেতুক ভয়ের কোনও কারণই নেই। তবু শুধুমাত্র জেনে রাখা ভাল বলে বলা যেতে পারে, ট্রেনের গার্ডের কাছে প্রয়োজনে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ‘ফার্স্ট এড বক্স’ থাকে। গার্ডদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গুরুতর কিছু হলে টিকিট পরীক্ষক বা রাজধানীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনে যেখানে ট্রেন সুপারিন্টেন্ডেন্ট আছেন, তাঁদের সঙ্গে তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করা উচিত। ওঁরা খবর পাঠিয়ে পরবর্তী স্টেশনে ডাক্তার আনার ব্যবস্থা করেন। এমনকি, দরকার হলে রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। আর চিন্তার কোনও কারণ নেই। এখন শুধু বেরিয়ে পড়ার পালা!

(লেখক রেলের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE